স্বামী চাহিদা পুরন না করায় রাজমিস্ত্রির হাত ধরে পালালেন ‘নিঃসঙ্গ’ ২ বউ

দুই বউ-ই ইদানিং দীর্ঘ সময় মোবাইলে ব্যস্ত থাকত। কিন্তু তলে তলে যে এত ‘গভীর’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বাড়ির ২ বউ! তা ঘুণাক্ষরেও কেউ বুঝে উঠতে পারেননি।

আট বছর আগে বিয়ে হলেও সন্তান হয়নি অনন্যার। তার উপর স্বামীও কাজে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকায় নিঃসঙ্গতা আরও চেপে ধরেছিল নিঃসন্তান গৃহবধূকে। আর সেই নিঃসঙ্গতা থেকেই বাড়িতে কাজ করতে আসা রাজমিস্ত্রির সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বালির কর্মকার বাড়ির বড় বউ।

আসানসোল থেকে হাওড়ার নিশ্চিন্দা থানায় নিয়ে আসার পর তদন্তকারী অফিসারদের এমনটাই জানিয়েছেন বালির কর্মকার বাড়ির বড় বউ অনন্যা। অন্যদিকে ছোট বউ রিয়ার বিয়ে হয় বছর দশেক আগে।

তাঁর একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। কিন্তু তাঁরও অভিযোগ, স্বামী তাঁকে সময় দিত না। ‘স্বামীসঙ্গে’র অভাবে সংসার জীবনে একঘেয়েমি তৈরি হয়েছিল বলে পুলিসকে দুই বউ-ই জানিয়েছেন।

পুলিসকে কর্মকার বাড়ির দুই বউ জানিয়েছেন, গতানুগতিক সংসার জীবনে ক্রমশ অনীহা ঘিরে ধরেছিল তাঁদের। গ্রাস করছিল মানসিক অবসাদ। এমন অবস্থাতেই তাঁদের আলাপ হয় বাড়ি তৈরি করতে আসা দুই রাজমিস্ত্রি শেখর রায় ও শুভজিত দাসের সঙ্গে।

মুর্শিদাবাদের সুতির বাসিন্দা দুই যুবক পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও মিষ্টিভাষী। সহজেই মিশে যেতে পারত সবার সাথে। খুব সহজেই তাঁরা অনন্যা ও রিয়ার মন জয় করে নেয়। আলাপ জমে ওঠে। ধীরে ধীরে ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়ে। দুই রাজমিস্ত্রির ‘প্রেমে’ পড়ে যান দুই গৃহবধূ।

আর তারপরই ‘প্রেমিক’দের সঙ্গে ‘সংসার’ পাততে ঘর ছেড়ে পালাবার পরিকল্পনা কষেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, দুই ‘প্রেমিকে’র সঙ্গে মুম্বইতে গিয়ে ‘ঘর’ বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর শ্রীরামপুরে শপিং করতে যাওয়ার নামে বাড়ি থেকে বের হন অনন্যা ও রিয়া। তারপর সুতি হয়ে মুম্বইতেও পৌঁছন। কিন্তু টাকার যোগানে টান পড়ায় ফের এরাজ্যে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।

বুধবার ফেরার সময়ই আসানসোলে ২ প্রেমিক সহ ধরা পড়েন ২ বউ। তবে শুধুই কি সংসার জীবনে একঘেয়েমি থেকে ‘প্রেমিক’দের সঙ্গে মুম্বইতে গিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন? নাকি মুম্বইতে যে নতুন জীবনের স্বপ্ন ২ গৃহবধূকে দেখানো হয়েছিল,

তার পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল? সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। কী এমন হল যে দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে হল দুই বউ অনন্যা ও রিয়াকে? সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।

বাড়ির ছেলে প্রভাত কর্মকার জানান, কাজের জন্য তাঁদের দুই ভাইয়ের প্রায় রোজই ফিরতে দেরি হত। কিন্তু দুই বউয়ের কথায় কিংবা আচার ব্যবহারে কখনও মনে হয়নি যে তাঁদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

তবে অনন্যার কাছে নতুন মোবাইল ফোন দেখে কিছুটা খটকা লেগেছিল। পরিবারের লোকেরা জানাচ্ছেন, দুই বউ-ই ইদানিং দীর্ঘ সময় মোবাইলে ব্যস্ত থাকত। কিন্তু তলে তলে যে এত ‘গভীর’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বাড়ির ২ বউ! তা ঘুণাক্ষরেও কেউ বুঝে উঠতে পারেননি।

অন্যদিকে, প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, কর্মকার পরিবার যথেষ্ট নিম্নবিত্ত ছিল। দুই ছেলে পলাশ ও প্রভাতকে কষ্ট করে মানুষ করেছেন তাঁদের বাবা। টালির চালের বাড়িতে ছোট মুদিখানার দোকান ছিল। তা থেকেই যা আয় হত, তা দিয়েই সংসার চলত।

এরপর দুই ছেলে বড় হয়ে একই কোম্পানির অধীনে চাকরি শুরু করে। দুই ছেলে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই টাকা জমিয়ে টালির বাড়ি পাকা করার পরিকল্পনা নেয় কর্মকার পরিবার। সেইমতো গত ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। পরিচিত একজন তখন রাজমিস্ত্রি হিসাবে শেখর ও শুভজিতকে ঠিক করে দিয়েছিল।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *