ওপার বাংলার খবরঃ
ফেসবুকে পরিচয়, এরপর পারিবারিক
ভাবে বিয়ে। কিন্তু তাদের সংসার সুখে কাটেনি এক সপ্তাহও।
প্রতিনিয়ত রুটিন করে পেটানো হতো রামিসা তাবাস্সুম আলিনাকে। এর নেপথ্যে ছিল টাকা আর লোভের ঘৃন্য-গল্প।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী রামিসার সঙ্গে
সরকারি এক কর্মকর্তার ছেলে তানভীর কামাল তন্ময়ের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই যৌতুকের জন্য শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।
এমনই অভিযোগ ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর।
রামিসা বলেন, বিয়ের কাবিন হয় ১২ই মার্চ এবং ৮ দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেয় আমাকে। ঋণ শোধের কথা বলে বিয়ের তৃতীয় দিনের মাথায় আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা ৮ লাখ টাকা নিয়ে নেয় তন্ময়। তখন পর্যন্ত আমি বুঝতে পারিনি এটা যৌতুক হিসেবে আমার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে।
শ্যামলীতে নানুর বাসায় বড় হন রামিসা। তার বয়স যখন এক বছর তখন বাবা-মায়ের ডিভোর্স হয়ে যায়। পরবর্তীতে তার মা দ্বিতীয় বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হয়েছেন। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করে রাজধানীতেই বসবাস করছেন। রামিসার নানুদের আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়ায় তাকে প্রতিনিয়ত টাকার জন্য চাপ দেওয়া হতো।
বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় প্রথম রামিসার গায়ে হাত তোলে তন্ময়। ওইদিন তন্ময় এবং তার মা তার কক্ষে যান কথা বলতে। তারা জানায়, ‘তন্ময় লন্ডনে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে যাবে। সব মিলিয়ে ৭০ লাখ টাকা লাগবে। তোমার নানার পরিবার যেহেতু বিত্তশালী সেখান থেকে টাকাটা এনে দাও।’ টাকা আনতে পারবে না বলার পর তন্ময় এবং তার মা ওইদিন থেকে প্রতিনিয়ত রামিসাকে রুটিন করে পেটাতেন।
রামিসা জানান, সর্বশেষ ১৭ই জুন আমাকে টানা এক ঘণ্টা পেটানোর এক পর্যায়ে নাক দিয়ে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে সে আমাকে নির্যাতন করে। ওইদিন রাতে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়াদের ফোন পেয়ে পুলিশ এলে তন্ময়ের খালাতো ভাই তাদের ফিরিয়ে দেয়। তাছাড়া আমিও পুলিশকে জানাই, মামলা করবো না। আমি সংসার করতে চাই।
এ বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী আদাবর থানায় একটি অভিযোগ দিয়ে গেছেন, এ পর্যন্তই জানি। তবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের কাছে যারাই আইনি সহযোগিতা নিতে আসেন তাদের প্রত্যেককেই সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়া নারী নির্যাতনের বিষয়গুলো সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আমরা দেখি। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।