ঠাকুরদাকে সুস্থ করতে সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে জলে চুবিয়ে ‘বলিদান’ পরিবারের!

মধ্যযুগীয় নৃশংসতার সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ভারতের শহর। ঠাকুরদার প্রাণ বাঁচাতে উৎসর্গ করা হল ছ’মাসের শিশুকন্যাকে। অসুস্থ ঠাকুরদাকে সুস্থ করে তুলতে ট্যাঙ্কের জলে ডুবিয়ে তাকে খুন করার অভিযোগ উঠল ঠাকুমার বিরুদ্ধে।

তামিলনাড়ুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেশ জুড়ে। তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুর জেলার পাট্টুকোট্টাই শহরে এক ছ’মাসের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ উঠেছে পরিবারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এলাকার টহলদার পুলিশকে ওই শিশুকন্যার মৃত্যুর বিষয়ে খবর দেন। তারপরেই তা জনসমক্ষে আসে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাট্টুকোট্টাইয়ের বাসিন্দা বছর বত্রিশের নাসিরুদ্দিনের কাকা আসারুদ্দিন বিদেশে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরিবারের দাবি, বাড়ি ফিরে আসার পর গত কয়েক মাসে তিনি বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। চিকিৎসক দেখিয়েও শান্তি হয়নি পরিবারের। সে কারণে তাঁর স্ত্রী শর্মিলা বেগম এক মুসলমান তান্ত্রিকের কাছে তাঁকে নিয়ে যান।

অভিযোগ, সেই তান্ত্রিক তাঁকে উপায় হিসাবে বলেন, স্বামীকে সুস্থ করে তুলতে গেলে একটি শিশুকে বলি দিতে হবে। কিন্তু কোনও রকম রক্তপাত করা চলবে না। এ দিকে মাস ছয়েক আগেই নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী শালিহা এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, তান্ত্রিকের কথা শোনামাত্রই তাকেই উৎসর্গ করার পরিকল্পনা ছকে ফেলেন শর্মিলা।

গত মঙ্গলবার শর্মিলা বেগম রাতের অন্ধকারে শালিহার ঘর থেকে শিশুটিকে চুরি করেন। পরে শালিহা মেয়েকে না পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দিলে সব ঘটনা খুলে বলেন শর্মিলা। এমনকী তিনি নিজেই শালিহাকে নিয়ে যান বাড়ির পিছনে যেখানে ট্যাঙ্কের ভিতর ছ’মাসের শিশুকন্যাটিকে ডুবিয়ে মেরেছেন।

শালিহা দাবি করেছেন, সে সময়ই তিনি ঘটনার প্রতিবাদ করে পুলিশে খবর দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিবার তাঁকে বাধা দেয়। অভিযোগ শালিহাকে চুপ করিয়ে রেখে শর্মিলাই বাড়ির উঠোনে শিশুটির দেহ সমাহিত করে দেন। এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলতেও নিষেধ করা হয়েছিল।

পরে বিষয়টি জানাজানি হতেই তহশিলদার এলাকায় আসেন। খবরের সত্যতা যাচাই করে পুলিশে রিপোর্ট করেন। তারপর পুলিশের তত্ত্বাবধানে নাসিরুদ্দিনদের বাড়ির উঠোন খুঁড়ে বের করা হয় শিশুর মৃতদেহ। তা অটোপসি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে শর্মিলাকে। খোঁজ চলছে ওই তান্ত্রিকেরও।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *