মানুষের জীবন যে কখন কিভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায় এ কথা কিন্তু কেউ বলতে পারেনা। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনেও আমরা এমন একজন ব্যক্তির কথা আলোচনা করব যার জীবন এমন ধারায় পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে যে সংগ্রাম চালানো ছাড়া তার কাছে আর কোন সহজ উপায় নেই। আজকে আমরা বলব এক অত্যন্ত সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষ রাজেশের কথা।
কাজের সন্ধানে বছর দশেক আগে বিহার থেকে মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে চলে এসেছিলেন রাজেশ। এখানে এসে সিওনি জেলার এক মহিলার প্রেমে পড়েন। তাঁরা বিয়েও করেন। দুই সন্তানও হয় তাঁদের। কিন্তু তারপর তাদের জীবন যে খাতে প্রবাহিত হয় সেটা শুনলে হয়তো অনেকেই ভাবনায় পড়তে বাধ্য হবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
প্রসঙ্গত বিয়ে করার পরেও পাকাপাকিভাবে রাজেশের তার পরিবারকে নিয়ে কোথাও মাথা গোজার ঠাই হয়নি। এমতাবস্থায় স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে ফুটপাতেই জীবন যাপন করতেন তিনি। অনেক কষ্ট করে সংসার চালানোর জন্য তিনি একটি রিক্সা কিনেছিলেন। বহু কষ্টে স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়েই নিজের জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন রাজেশ। কিন্তু ভাগ্যের হয়তো একেবারেই অন্য কিছু মঞ্জুর ছিল।
সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বেশ কিছু দিন আগে রাজেশের স্ত্রী অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যান। তাঁকে খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন রাজেশ। সবথেকে বড় ব্যাপার তিনি যদি দিনে রিকশা চালিয়ে উপার্জন করতে চান সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের দেখবে কে এটাই ছিল রাজেশের সব থেকে বড় সমস্যা।
কিন্তু কোনও উপায় খুঁজে না পেয়ে, বড় সন্তানকে ফুটপাতে রেখে, এক বছরের সন্তানকে কোলে নিয়েই রিকশা চালাতে বেরিয়ে পড়েন রাজেশ। এখন তাঁর নিত্য দিনের রুটিন এটি। এ ভাবেই ছেলে কোলে নিয়ে দিনের পর দিন রিকশা চালাচ্ছেন। বর্তমান যুগ সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। নেট মাধ্যমের দরুন এই ঘটনাটি অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ভাইরাল হয়ে ওঠে।
এর পরেই শিশু কল্যাণ কমিটির তরফ থেকে রাজেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জানা যাচ্ছে তারা রাজেশকে সন্তানদের দেখাশোনা করার প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের সুবিধা ও দিতে চলেছেন বলে খবর দেওয়া হয়েছে। যদিও এই প্রস্তাব পাওয়ার পর রাজেশের প্রতিক্রিয়া কি রয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে নিঃসন্দেহে এভাবে সুবিধা নিলে যে ভবিষ্যতে আর কোন সমস্যা রাজেশের হবে না এ কথা আমরা বলতেই পারি ।
Leave a Reply